[SSC] বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
সৃজনশীলঃ ০১
জাহিদ এবং করিম বন্ধু। তারা দশম শ্রেণিতে পড়ে। করিম গত গ্রীষ্মের ছুটিতে সিলেটে জাহিদের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল। সে সিলেটের ভূপ্রকৃতি ও চা বাগান গভীরভাবে লক্ষ করল। করিম সেখানের প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলােকে অনেক উপভােগ করল। জাহিদও গত বছর করিমদের বাড়ি খুলনা ভ্রমণ করেছে। সে সেখানে খুবই সুন্দর অরণ্য দেখেছে।
ক. বাংলাদেশে শীতলতম মাস কোনটি?
খ. প্রতিপাদ স্থান কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. জাহিদের অঞ্চলের ভূপ্রকৃতিটির নাম কী? উক্ত ভূপ্রকৃতিটি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দাও।
ঘ. করিমের দেখা অরণ্যটি সম্পর্কে তােমার মতামত বিশ্লেষণ কর।
ক) বাংলাদেশে শীতলতম মাস হচ্ছে জানুয়ারি।
খ) প্রতিপাদ স্থান সম্পূর্ণভাবে একে অন্যের বিপরীত দিকে থাকে। প্রতিপাদ স্থান নির্ণয় করার জন্য ভূপৃষ্ঠের কোনাে বিন্দুকে পৃথিবীর কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে একটি কল্পিত রেখা পৃথিবীর ঠিক বিপরীত দিকে টানা হয়। ঐ কল্পিত রেখা যে বিন্দুতে ভূপৃষ্ঠে বিপরীত পাশে এসে পৌছায় সেই বিন্দুই পূর্ব বিন্দুর প্রতিপাদ স্থান।
গ) জাহিদের অঞলের ভূপ্রকৃতির নাম টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ। বাংলাদেশের মােট ভূমির প্রায় ১২% এলাকা নিয়ে টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ গঠিত। আজ থেকে প্রায় ২ মিলিয়ন বছরেরও আগে টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উথিত হওয়ার সময় এসব পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ অঞলের পাহাড়সমূহকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা— দক্ষিণ-পূর্বাঞলের পাহাড়সমূহ এবং উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞলের পাহাড়সমূহ। এদেশে ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার উত্তরাংশ, সিলেট জেলার উত্তর-পূর্বাংশ এবং মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণের পাহাড়গুলাে নিয়ে এ টারশিয়ারি অঞ্চল গঠিত। এ পাহাড়গুলাের উচ্চতা ২৪৪ মিটারের বেশি নয়। উদ্দীপকের জাহিদের বাড়ি সিলেটে হওয়ায় জাহিদের অঞ্চলের ভূপ্রকৃতির নাম টারশিয়ারি যুগের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ।
ঘ) করিমের দেখা অরণ্যটি হলাে বাংলাদেশের স্রোত বা গরান বনভূমি। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ, খুলনা, নােয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার উপকূলে জোয়ার-ভাটার লােনা ও ভেজা মাটিতে যেসব উদ্ভিদ জন্মায় তাদের স্লোতজ বা গরান বনভূমি বলা হয়। প্রধানত সুন্দরবনে এসব উদ্ভিদ বেশি জন্ম নেয়। সঁতসেঁতে লােনা পানিতে সুন্দরি-গেওয়া, পশুর, ধুন্দল, কেওড়া, বাইন, গরান, গােলপাতা ইত্যাদি উদ্ভিদ জমে এক অরণ্যের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের মােট ৪,১৯২ বর্গ কিলােমিটার স্রোতজ বা গরান বনভূমি রয়েছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম স্রোতজ বা গরান বনভূমির অল। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মােকাবিলায় এ বনভূমি প্রাকৃতিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কাজ করে। উদ্দীপকের জাহিদ গত বছর করিমদের বাড়ি খুলনায় ভ্রমণ করেছে। সে সেখানে খুবই সুন্দর অরণ্য দেখেছে। বাংলাদেশে দক্ষিণ- পশ্চিমাংশের জেলা খুলনা স্রোতজ বা গরান বনভূমির অন্তর্ভুক্ত। এ প্রেক্ষিতে প্রতীয়মান হয় যে, করিমের দেখা অরণ্যটি বাংলাদেশের স্রোতজ বা গরান বনভূমি।
সৃজনশীলঃ ০২
আবরার টেলিভিশনে একটি দুর্যোগের প্রতিবেদন দেখছিল । প্রতিবেদনটি ছিল জাপানের একটি দ্বীপের হঠাৎ কেঁপে উঠা সম্পর্কিত, যার ফলাফল ছিল উল্লেখযােগ্য সংখ্যক বাসস্থান ভেঙে পড়া এবং বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক সংযােগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া। আবরার জানতে পারল যে, এ দুর্যোগটি বাংলাদেশেও ঘটতে পারে।
ক. জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান কী?
খ. ‘আশ্বিনা ঝড়’ ধারণাটি ব্যাখা দাও।
গ. তুমি কীভাবে প্রমাণ করবে যে উল্লিখিত দুর্যোগটি বাংলাদেশেও ঘটতে পারে?
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দুর্যোগটির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হ্রাসকল্পে তুমি কীভাবে প্রস্তুতি নেবে?
ক) জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান নবম।
খ) অক্টোবর-নভেম্বর দুই মাস ভারতে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। দিক পরিবর্তন করে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুতে পরিণত হতে থাকে বলে কোনাে কোনাে স্থানে ঘূর্ণিঝড়ের মাধ্যমে বৃষ্টিপাত হয়। পশ্চিমবঙ্গে এ ঝড়কে আশ্বিনা ঝড় বলে।
গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত দুর্যোগটি হলাে ভূমিকম্প। ভূমিকম্প বাংলাদেশেও হতে পারে। কেননা ভৌগােলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান ও ইউরােপিয়ান প্লেটের সীমানার কাছে অবস্থিত। এ কারণে বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। ভূমিরূপ ও ভূঅভ্যন্তরীণ কাঠামােগত কারণে বাংলাদেশে ভূআলােড়নজনিত শক্তি কার্যকর ফলে এখানে ভূমিকম্প হয়। ভূমিরূপজনিত কারণে ভূমিকম্প হয়ে থাকে আবার পাহাড় কাটাসহ মানবসৃষ্ট কারণেও ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্প বলয়ে অবস্থিত। বাংলাদেশে ভূমিকম্প হয় টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে। ভূতাত্ত্বিকগণের মতে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং এর পার্শ্ববর্তী বিশেষ করে উত্তর ও পূর্বদিকে ভূমিকম্প হওয়ার মতাে যথেষ্ট ফল্ট বা চ্যুতি বিরাজ করছে। যার ফলে বাংলাদেশেও ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। সুতরাং, বাংলাদেশের ভৌগােলিক অবস্থান বিশেষজ্ঞ ও ভূতাত্ত্বিকগণের মতামতের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয় যে বাংলাদেশও ভূমিকম্প ঘটতে পারে।
ঘ) ভূমিকম্পের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে জীবন ও সম্পদের পরিমাণ হ্রাসকল্পে আমি নিম্নলিখিত প্রস্তুতিসমূহ গ্রহণ করব। যেমন- নতুন বাড়ি তৈরি করার সময় স্ট্রাকচার ও ডিজাইন করার সময় ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুসরণ করব। দক্ষ প্রকৌশলীর তদারকির মাধ্যমে ভালাে নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে বাড়ি তৈরি করব। পাকা বাড়ি তৈরি করার সময় দরজা ও জানালা ঘরের কোনায় না হওয়ার নির্দেশ দেব। কেননা এতে করে ইটের দেয়ালের ভবনের প্রতিরােধ ক্ষমতা বহুগুণ। কমে যাবে। এছাড়াও বাড়িতে একটি ব্যাটারিচালিত রেড়িও এবং টর্চ বাতি সব সময় রাখব। প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখব। বাড়ির সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থানটি চিহ্নিত করে রাখব। হাসপাতাল, ফায়ার বিগ্রেড প্রভৃতির ফোন নাম্বার সাথে রাখব।
সৃজনশীলঃ ০৩
এসএসসি পরীক্ষার পর আরাফ হােসেন বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের একটি পাহাড়ি জেলায় তার মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। একদিন সকালে হঠাৎ সে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনুভব করল। এটি বাংলাদেশে হয়ে থাকে টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্যের কারণে।
ক. বাংলাদেশের পিরামিড নামক শৃঙ্গের উচ্চতা কত?
খ. পৃথিবীর ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলগুলাের নাম লেখ।
গ. আরাফ হােসেন যে অঞ্চলে বেড়াতে গিয়েছিল সে অঞলের ভূ- প্রকৃতির গঠনগত বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিত করা দুর্যোগটি মােকাবিলা করার জন্য কী কী পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত বলে তুমি মনে কর?
ক) বাংলাদেশের পিরামিড নামক শৃঙ্গের উচ্চতা হলাে ৯১৫ মিটার।
খ) ভূমিকম্পের প্রকোপ পৃথিবীর সর্বত্র সমান নয়। ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলােকে তিনটি প্রধান অংশে ভাগ করা যায়। যথা- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশ, ভূমধ্যসাগরীয় হিমালয় অংশ এবং মধ্য আটলান্টিক-ভারত মহাসাগরীয় শৈলশিরা অংশ। এ তিনটি অংশের উল্লেখযােগ্য কয়েকটি অঞল হলাে— জাপান, চিলি, ইরান, হিমালয়, ইন্দোচীন প্রভৃতি। পৃথিবীর এসব অঞলে ভূমিকম্পের প্রকোপ বেশি থাকে।
গ) উদ্দীপকের আরাফ হােসেন যে অঞলে বেড়াতে গিয়েছিল সেটি ছিল দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ে ঘেরা একটি জেলা। বাংলাদেশে সামান্য পরিমাণে উঁচু ভূমি রয়েছে। ভূপ্রকৃতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। তার মধ্যে টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ একটি। বাংলাদেশের মােট ভূমির প্রায় ১২% এলাকা নিয়ে টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ গঠিত। উদ্দীপকের আরাফ যে পাহাড়ি এলাকা দেখতে গিয়েছিল সেটি টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহের অন্তর্গত ভূপ্রাকৃতিক অঞ্চল। টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহকে দু ভাগে ভাগ করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ এর মধ্যে একটি। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার পূর্বাংশ এ অঞ্চলের অন্তর্গত। এ অঞ্চল, সমভূমি নয় । এ অঞলের পাহাড়গুলাে বেলে পাথর, কর্দম ও শেল পাথর দ্বারা গঠিত। অতএব নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, আরাফ হােসেন দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় বেড়াতে গিয়েছিল।
ঘ) উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দুর্যোগটি হলাে ভূমিকম্প। আর ভূমিকম্প নামক ভয়াবহ এ দুর্যোগটি মােকাবিলা করার জন্য বেশকিছু পূর্বপ্রস্তুতি। গ্রহণ করা যেতে পারে বলে আমি মনে করি। যেকোনাে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঠিক পূর্বাভাস ক্ষয়ক্ষতির হার কমাতে সাহায্য করে। উদ্দীপকে আরাফ ভূমিকম্প নামক প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনুভব করে। অন্যান্য দুর্যোগের চেয়ে এর প্রকৃতি আলাদা, এটি সরাসরি পর্যবেক্ষণের কোনাে সুযােগ নেই। তারপরও আমরা নিচে উল্লিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এর ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা হ্রাস করা যাবে। যেমন- বাড়ি তৈরির সময় মাটি পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞ। প্রকৌশলীর পরামর্শ নিয়ে বাড়ির ভিত মজবুত করতে হবে। বাড়ি তৈরির সময় দুটি বাড়ির মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব রাখতে হবে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার একাধিক পথ রাখতে হবে এবং বহুতল ভবনে জরুরি সিঁড়ি রাখতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন ত্রুটিমুক্ত রাখতে হবে । বাড়ির আসবাবপত্র যথাসম্ভব কাঠের হওয়া ভালাে। প্রতিটি বাড়িতে সদস্যদের জন্য হেলমেট রাখতে হবে। ভূমিকম্পের সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সুইচ বন্ধ রাখতে হবে। তাড়াহুড়া না করে খােলা জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে ইত্যাদি। পরিশেষে উপরিউক্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত বলে আমি মনে করি।
সৃজনশীলঃ ০৪
রহিম ও করিম দুই ভাই টেবিলে বসে লেখাপড়া করছিল। হঠাৎ টেবিলটি নড়ে উঠলে একজন আরেকজনকে দোষারােপ করতে। থাকে। পরক্ষণে তাদের পুরাে ছয়তলা বাড়িটি নড়ে উঠল। তারা। আসল ঘটনা উপলব্ধি করে দ্রুত সিড়ি দিয়ে নিচে নামার চেষ্টা করল।
ক. বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের উচ্চতা কত মিটার?
খ. বাংলাদেশের জলবায়ু ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘটনাটিতে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত দুর্যোগ মােকাবিলায় কী প্রস্তুতি ও প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত তুমি মনে কর?
ক) বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ তাজিওডং (বিজয়)-এর উচ্চতা ১২৩১ মিটার।
খ) একটি বৃহৎ অলব্যাপী আবহাওয়ার উপাদানগুলাের দৈনন্দিন অবস্থার দীর্ঘদিনের গড় অবস্থাকে জলবায়ু বলে। বাংলাদেশের জলবায়ু মােটামুটি উষ্ণ, আর্দ্র ও সমভাবাপন্ন। মৌসুমি জলবায়ুর কারণে এদেশে বছরের বিভিন্ন ঋতুতে জলবায়ুর কিছুটা তারতম্য ঘটে । মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাব এখানে এত অধিক যে, সামগ্রিকভাবে এ জলবায়ু ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু’ নামে পরিচিত।
গ) উদ্দীপকে রহিম ও করিমের দেখা দুর্যোগটি ভূমিকম্পকে নির্দেশ করছে। কখনাে কখনাে ভূপৃষ্ঠের কতক অংশ হঠাৎ কোনাে কারণে কেঁপে ওঠে। এ কম্পন মৃদু থেকে প্রচণ্ড হয়ে থাকে যা মাত্র কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়। ভূপৃষ্ঠের এরূপ আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প বলে। ভূমিকম্প যে স্থানে উৎপত্তি লাভ করে তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র বলে। ভূঅভ্যন্তরের এ কেন্দ্রের ঠিক সােজাসুজি উপরে ভূপৃষ্ঠের স্থানের নাম উপকেন্দ্র। কম্পনের বেগ উপকেন্দ্র হতে ধীরে ধীরে চারদিকে কমে যায়। এ কম্পন ভূপৃষ্ঠের ওপর সবকিছুতেই কাঁপন সৃষ্টি করে। ফলে ঘরবাড়ি এবং আসবাবপত্রসহ সবকিছু নড়ে ওঠে। তদ্রুপ উদ্দীপকে হঠাৎ টেবিল কেঁপে ওঠে এবং পরক্ষণে বাড়িটি নড়তে দেখা যায় । অতএব পাঠ্যবইয়ের আলােচনা থেকে বলা যায়, উদ্দীপকের রহিম ও করিমের দেখা ঘটনাগুলাে ছিল ভূমিকম্পের প্রত্যক্ষ ফল।
ঘ) উদ্দীপকে রহিম ও করিম দুর্যোগটির ঝুঁকি মােকাবিলায় । ভূমিকম্পের প্রস্তুতিস্বরূপ একজন ব্যক্তির যা করণীয় সে ধরনের। প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করেন। যেমন- বাড়িতে একটি ব্যাটারিচালিত রেডিও এবং টর্চ বাতি সবসময় রাখা।। প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা। বাড়ির গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের মেইন সুইচ কোথায় তা জেনে রাখা এবং এগুলাে বন্ধ করতে হয় তা শিখে রাখা। বাড়ির সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থানটি চিহ্নিত করা। হাসপাতাল, ফায়ার ব্রিগেড প্রভৃতির ফোন নাম্বার সাথে রাখা। স্কুলে বাচ্চাদের ভূমিকম্প সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। ভূমিকম্পের সময় কী করতে হবে তা শিখিয়ে দেওয়া। খেলার মাঠে থাকাকালীন সময়ে দালানকোঠা থেকে দূরে থাকা ইত্যাদি। আর ভূমিকম্পের প্রস্তুতিস্বরূপ একজন ব্যক্তির করণীয় এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে ভূমিকম্প ঘটে যাওয়া সত্ত্বেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ হবে। তাই বলা যায়, রহিম ও করিম উক্ত দুর্যোগ তথা ভূমিকম্পের ঝুঁকি মােকাবিলায় উপরিউক্ত পূর্বপ্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে আমি মনে করি।