[SSC] বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
সৃজনশীলঃ ০১
সমুদ্র পানিরাশির নিয়মিতভাবে ফুলে উঠাকে বলা হয় জোয়ার এবং নেমে যাওয়াকে ভাটা বলে। জোয়ার-ভাটা প্রতি ৬ ঘণ্টা ১৩ মিনিট পর পর ঘটে থাকে।
ক. শূন্য ডিগ্রি অক্ষাংশ ও শূন্য ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ কোথায় পরস্পরকে ছেদ করেছে?
খ. পৃথিবীর ঘূর্ণনের ফলে কিসের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে?
গ. উল্লিখিত ক্ষেত্রসমূহে পূর্ণিমা এবং অমাবস্যার প্রভার বিশ্লেষণ কর।
ঘ. আমরা কি উল্লিখিত ঘটনাসমূহ থেকে কোনাে সুবিধা লাভ করি? কীভাবে?
ক) শূন্য ডিগ্রি অক্ষাংশ ও শূন্য ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ গিনি উপসাগরের কোনাে একটি স্থানে পরস্পরকে ছেদ করেছে।
খ) পৃথিবী ঘূর্ণনের ফলে কোন নির্দিষ্ট স্থানের দিন বা রাত্রির সময়ের স্বায়িত্বের পরিবর্তনকে দিবা-রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি বলা হয়। পৃথিবী ঘূর্ণনের ফলে সূর্যের সাথে তার কৌণিক দূরত্ব ও অবস্থানগত দূরত্বের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। যেমন- উত্তর গােলার্ধে ২১ জুন দিনের স্থায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। আবার ২২ ডিসেম্বর রাতের স্থায়িত্ব সবচেয়ে বেশি।
গ) উদ্দীপকে জোয়ার ও ভাটার প্রতি আলােকপাত করা হয়েছে। উভয়ক্ষেত্রেই পূর্ণিমা ও অমাবস্যার প্রভাব রয়েছে। চাদ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। চাদের এ আবর্তনকালে পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের নিকটবর্তী হয় সেখানে চাদের আকর্ষণ হয় সবচেয়ে বেশি। ফলে পার্শ্ববর্তী স্থান থেকে পানি এসে ঠিক চন্দ্রের নিচে ফুলে ওঠে এবং জোয়ার হয় পূর্ণিমা তিথিতে পৃথিবীর একপাশে চাঁদ ও অপরপাশে সূর্য অবস্থান করে। ফলে পূর্ণিমার প্রভাবে চন্দ্র ও সূর্য সমসূত্রে অবস্থানে। থেকে উভয়ের মিলিত আকর্ষণে প্রবল জোয়ার সৃষ্টি হয়। অমাবস্যার তিথিতে চন্দ্র ও সূর্য পৃথিবীর একইপাশে অবস্থান করে এবং সমসূত্রে অবস্থানজনিত কারণে এ সময়েও প্রবল জোয়ার সৃষ্টি হয়। এভাবেই উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘটনা অর্থাৎ জোয়ারভাটা সংঘটিত হয়।
ঘ) হ্যা, উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘটনাসমূহ থেকে আমরা নানাবিধ সুবিধা পেয়ে থাকি। উল্লিখিত ঘটনা হচ্ছে জোয়ার ও ভাটা, যা স্থলভাগ, পানিরশি ও মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ প্রভাব রাখে। দৈনিক দু'বার করে জোয়ারভাটা হওয়ার ফলে নদীর আবর্জনা পরিষ্কার হয়ে পানি নির্মল হয়। ফলে নদীর মুখে পলি জমতে পারে না এবং নদীর মুখ বন্ধ হতে পারে না। ফলে আমরা নদীর পানি পেয়ে যাচ্ছি অনন্তকাল থেকে। একইসাথে জোয়ার-ভাটার স্রোতে নদীর খাত গভীর হয়। আমরা অনেক নদীতে জোয়ারের ফলে আসা পানি বাঁধ দিয়ে আটকে কৃষিজমিতে সেচ হিসেবে ব্যবহার করতে পারি । বাংলাদেশের মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে জোয়ার-ভাটাকে কেন্দ্র করে বড় বড় জাহাজ নদীপথ দিয়ে বন্দরে ভিড়তে পারে এবং ভাটার টানে সমুদ্রে ফেরত যায়। আবার সমুদ্রে জোয়ারের পানি আবদ্ধ করে শুকিয়ে আমরা লবণ পেয়ে থাকি। এভাবেই আমরা উল্লিখিত ঘটনা অর্থাৎ জোয়ারভাটা থেকে বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকি।
সৃজনশীলঃ ০২
রুম্মান পূর্ণিমা উপভােগ করতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গিয়েছিল। সে লক্ষ করল যে পূর্ণিমার সময় সমুদ্রস্রোত বেশ উত্তাল এবং নতুন চাঁদ উঠার দিনও একই অবস্থা বিরাজ করে। অষ্টমীতে এ অবস্থা পরিবর্তিত হতে শুরু করে এবং একইভাবে নতুন চাঁদ কিংবা পূর্ণিমাতেও পরিবর্তিত হয়। সমুদ্রের পানির এ উত্থান-পতনের কতিপয় সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে।
ক. উপকেন্দ্র কী?
খ. শিশুর সামাজিকীকরণের প্রথম প্রতিষ্ঠান কোনটি এবং একে কেন প্রথম ধরা হয়?
গ. সমুদ্রের পানির এ উত্থান-পতনের কারণ বিশ্লেষণ কর।
ঘ. পূর্ণিমার রাত ও অষ্টমী রাতের ঘটনার মধ্যে তুলনামূলক আলােচনা কর।
ক) ভূমিকম্প কেন্দ্রের ঠিক সােজাসুজি উপরের ভূপৃষ্ঠ অংশের নাম হলাে উপকেন্দ্র।
খ) শিশুর সামাজিকীকরণের প্রথম প্রতিষ্ঠান পরিবার। কারণ পরিবারের মধ্যেই সামাজিকীকরণের ক্ষেত্র প্রস্তুত থাকে শিশুর জন্মের আগ থেকেই। শিশু জন্মের পর তার পরিবারের সংস্পর্শেই সামাজিকীকরণের শিক্ষা লাভ করে থাকে। পরিবারই প্রথম শিশুকে সহযােগিতা, সহিষ্ণুতা, ভ্রাতৃত্ববােধ, ত্যাগ, ভালােবাসা প্রভৃতি গুণাবলি লাভ করে যা শিশুর সামাজিকীকরণে সহায়তা করে।
গ) সমুদ্রের পানির এ উত্থান-পতনের কারণ হলাে জোয়ার-ভাটা। সমুদ্রের পানি ফুলে প্রচণ্ড বেগে তীরে আছড়ে পড়াকে বলে জোয়ার। আবার পানি তীর থেকে দূরে সরে গেলে ভাটার সৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানিগণ মনে করেন যে, পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ শক্তি এবং পৃথিবীর চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণে জোয়ার-ভাটা হয়। পৃথিবীর সকল পদার্থের আকর্ষণ আছে এবং একটি অপরটিকে আকর্ষণ করে থাকে। এ আকর্ষণকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বলে। এই মাধ্যাকর্ষণের ফলে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে এবং চন্দ্র পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। যে যত বড় তার আকর্ষণ শক্তি তত বেশি। কিন্তু দূরত্ব বৃদ্ধি পেলে আকর্ষণ শক্তি কমে যায়। সূর্য চন্দ্র অপেক্ষা ২.৬০ কোটি গুণ বড় হলেও পৃথিবীর থেকে দূরত্ব চন্দ্রের দূরত্ব থেকে অনেক বেশি বলে পৃথিবীর ওপর চন্দ্রের আকর্ষণ শক্তি সূর্য অপেক্ষা দ্বিগুণ অর্থাৎ চন্দ্রের আকর্ষণের ফলে জোয়ারভাটা হয়।
ঘ) উদ্দীপকের পূর্ণিমার রাতের জোয়ার হলাে তেজ কটাল বা ভরা কটাল এবং অষ্টমী রাতের জোয়ার হলাে মরা কটাল। পূর্ণিমা তিথিতে পৃথিবীর এক পাশে চাঁদ ও অপর পাশে সূর্য অবস্থান করে। ফলে চন্দ্র ও সূর্য সমসূত্রে থাকে এবং উভয়ের মিলিত আকর্ষণে যে প্রবল জোয়ারের সৃষ্টি হয় তাকে তেজকটাল বা ভরা কটাল বলে। এজন্যই পূর্ণিমা রাতে সমুদ্র স্রোত বেশ উত্তাল থাকে। আবার অষ্টমীতে চন্দ্র ও সূর্য পৃথিবীর সমকোণে অবস্থান করার ফলে চন্দ্রের আকর্ষণে এ সময় চাঁদের দিকে জোয়ার হয়। কিন্তু সূর্যের আকর্ষণের জন্য এ জোয়ারের বেগ তত প্রবল হয় না। এরূপ জোয়ারকে মরা কটাল বলে। উদ্দীপকে মরা কটালের ফলে অষ্টমীতে সমুদ্রের অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। প্রতিমাসে দুবার ভরা কটাল এবং দুবার মরা কটাল হয়।
সৃজনশীলঃ ০৩
আশিক সন্ধ্যায় আকাশে একটি তারা জ্বলজ্বল করতে দেখল। এ বিষয়ে তার মনে কৌতুহল সৃষ্টি হলাে। সে তার স্কুলের শিক্ষকের কাছে জানতে পারল যে, এটি তারা নয়। এটি আমাদের নিকটবর্তী গ্রহ। তার শিক্ষক আরও বললেন সৌরজগতের একটি আশ্চর্য গ্রহ আছে যার ৩টি বলয় আছে।
ক. সৌরজগতের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে ছােট গ্রহটির নাম লেখ।
খ. গ্রহ ও গ্রহাণুপুঞ্জ বলতে কী বােঝ?
গ. ডিসেম্বরে আশিকের বাড়িতে ফেরার আগেই সূর্যাস্ত হওয়ার কারণ যে বিষয়ের উপর জড়িত তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সৌরজগতের কোন গ্রহটি বসবাসের জন্য আদর্শ বলে মনে কর? কেন মনে কর? যুক্তি দেখাও।
ক) সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি ও ছােট গ্রহটির নাম বুধ।
খ) মহাকর্ষ বলের প্রভাবে যে জ্যোতিষ্ক সূর্যের চারদিকে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিক্রমণ করছে তাদের গ্রহ বলে। গ্রহের নিজস্ব আলাে ও তাপ নেই। সূর্যের আলােয় আলােকিত হয়ে থাকে। অন্যদিকে, মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝের পরিসরে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রহাণু একত্রে পুঞ্জীভূত হয়ে পরিক্রমণ করছে। এ পরিসরের মধ্যে আর কোনাে গ্রহ নেই। ১.৬ কিলােমিটার থেকে ৮০৫ কিলােমিটার। ব্যাসসম্পন্ন গ্রহাণুগুলােকে একত্রিতভাবে গ্রহাণুপুঞ্জ বলে।
গ) ডিসেম্বরে আশিকের বাড়িতে ফেরার আগেই সূর্যাস্ত হওয়ার কারণ বার্ষিক গতির প্রভাব। বার্ষিক গতির প্রভাবে পৃথিবীতে দিন-রাত্রির হ্রাস বৃদ্ধি ও ঋতু পরিবর্তন ঘটে। ২২শে ডিসেম্বর সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ দিন। এই সময় সূর্য দক্ষিণ গােলার্ধে অর্থাৎ মকরক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। ফলে সেখানে দিন বড় ও রাত ছােট হয়। বিপরীত অবস্থা বিরাজ করে উত্তর গােলার্ধে বা কর্কটক্রান্তি রেখায়। এ সময় সূর্য উত্তর গােলার্ধে তীর্যকভাবে কিরণ দেয় বলে দিন ছােট হয় ও রাত বড় হয়। এই তারিখের দেড় মাস পূর্বে ও পরে দক্ষিণ গােলার্ধে গ্রীষ্মকাল এবং উত্তর গােলার্ধে শীতকাল থাকে। যেহেতু এই সময় দিন ছােট থাকে এবং রাত বড় থাকে, এজন্য উত্তর গােলার্ধে অবস্থারনত আশিকের ডিসেম্বরে বাড়িতে ফেরার আগেই সূর্যাস্ত হয়।
ঘ) সৌরজগতের ৮টি গ্রহের মধ্যে পৃথিবী নামক গ্রহটি মানুষের বসবাসের উপযােগী। কেননা পৃথিবীর চারদিক নানা প্রকার গ্যাসীয় আবরণ দ্বারা বেষ্টিত। অদৃশ্য এই গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে। একে বায়ুমণ্ডল বলে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আকর্ষণে বায়ুমণ্ডল ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে লেপ্টে আছে। আর পৃথিবীর সঙ্গে আবর্তিত হচ্ছে। বায়ুর চাপের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠে এর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি এবং উপরের দিকে ঘনত্ব খুবই কম। বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন ও অক্সিজেনের প্রাধান্য রয়েছে। সকল প্রাণীর জন্য অক্সিজেন অত্যাবশ্যকীয়। কার্বন ডাইঅক্সাইড ছাড়া অন্যান্য উপাদান বায়ুতে মােটামুটি অপরিবর্তনীয় পরিমাণে থাকে। তবে ধূলা, ধোয়া, জলীয় বাম্প ইত্যাদি উপাদান বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পরিমাণে থাকে। পৃথিবীর সমস্ত জীবের বেঁচে থাকার জন্য বায়ুমণ্ডলের গুরুত্ব অপরিসীম। বায়ুমণ্ডলে ওজোন গ্যাসের একটি স্তর আছে, যা ওজোন স্তর নামে পরিচিত। এর গভীরতা প্রায় ১২-১৬ কি.মি.। সূর্যরশ্মির অতিবেগুনি রশ্মি শােষণ করায় এর তাপমাত্রা প্রায় ৭৬° সেলসিয়াস। পৃথিবীতে প্রাণী ও জীবজন্তুর বেঁচে থাকার জন্য প্রয়ােজন প্রচুর আলাে, বাতাস ও পানি। পৃথিবীপৃষ্ঠে গড় তাপমাত্রা ১৩.৯০° সেলসিয়াস। সূর্য থেকে যে তাপ ও আলাে পৃথিবীতে পৌছে তাও জীবজন্তুর জন্য সহনীয়। এজন্য পৃথিবীতে জীবজন্তু বসবাস করে।
সৃজনশীলঃ ০৪
মামুন দশম শ্রেণির একজন ছাত্র। এ বছর বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত সংলগ্ন একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে শিক্ষাসফরে যায়। যাওয়া-আসার পথে সে রাস্তার কাছাকাছি পাহাড়গুলােতে অনেক ঝরনা দেখতে পায়। সেখানকার পানির ছড়া ও নদীগুলােতে ছিল ব্যাপক স্রোত। অথচ ভরা বর্ষা-মৌসুমেও তার এলাকায় সে দেখে এসেছে, পানির অভাবে ধানের বীজতলা তৈরি বা ধান রােপণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ক. ভূমিকম্পের কেন্দ্র কাকে বলে?
খ. বাংলাদেশে খুব বেশি শীত এবং খুব বেশি গরম অনুভূত হয় না কেন?
গ. মামুনের ভ্রমণকৃত এলাকার ভূ-প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. মামুনের নিজ এলাকা এবং ভ্রমণকৃত এলাকার মধ্যে বৃষ্টিপাতের তারতম্যের সাথে স্থানীয় জলবায়ুর সম্পর্ক বিশ্লেষণ করাে।
ক) ভূ-অভ্যন্তরের যে স্থানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র বলে।
খ) বাংলাদেশের আবহাওয়া সমভাবাপন্ন বলে বাংলাদেশে খুব বেশি শীত ও খুব বেশি গরম অনুভূত হয় না। বাংলাদেশের জলবায়ু মােটামুটি উষ্ণ, আর্দ্র ও সমভাবাপন্ন। বাংলাদেশে সব জায়গায় আবহাওয়া প্রায় একই রকম। তাই এখানে খুব বেশি শীত ও গরম অনুভূত হয় না। তবে উত্তরাঞলের আবহাওয়ায় শীত-গ্রীষ্মের তারতম্য কিছু বেশি উপলব্বি হয়।
গ)মামুনের ভ্রমণকৃত এলাকাটি টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহের উত্তর-পূর্বাঞলের পাহাড়ের অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের মােট ভূমির প্রায় ১২% এলাকা নিয়ে টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ গঠিত। আজ থেকে প্রায় ২ মিলিয়ন বছরেরও আগে টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উথিতহওয়ার সময় এ সকল পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে। উদ্দীপকে মামুনের ভ্রমণকৃত এলাকা যেখানে সে পাহাড় ও নদীর স্রোত দেখতে পায় এলাকাটি উত্তর পূর্বাঞলের পাহাড়ের অন্তর্ভুক্ত। ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা জেলার উত্তরাংশ, সিলেট জেলার উত্তর ও উত্তর পূর্বাংশ এবং মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণের পাহাড়গুলাে নিয়ে এ অঞল গঠিত। এ পাহাড়গুলাের উচ্চতা ২৪৪ মিটারের বেশি নয়।উত্তরের পাহাড়গুলাে স্থানীয়ভাবে টিলা নামে পরিচিত। এগুলাের উচ্চতা ৩০ থেকে ৯০ মিটার। এ অঞ্চলের পাহাড়গুলাের মধ্যে চিকনাগুল, খাসিয়া ও জয়ন্তিয়া প্রধান।
ঘ) মামুনের নিজ এলাকা এবং ভ্রমণকৃত এলাকার মধ্যে বৃষ্টিপাতের তারতম্যের সাথে স্থানীয় জলবায়ুর সম্পর্ক রয়েছে। জলবায়ু বলতে একটি বৃহৎ অঞলব্যাপী আবহাওয়ার উপাদানগুলাের দৈনন্দিন অবস্থার দীর্ঘদিনের গড় অবস্থাকে বুঝায়। মানুষের জীবনে জলবায়ুর প্রভাব বহুমুখী ও গুরুত্বপূর্ণ। উদ্দীপকে মামুনের ভ্রমণকৃত এলাকায় পানির ছড়া থাকলেও তার নিজ এলাকায় বৃষ্টিপাতের অভাবে বর্ষার মৌসুমেও কৃষিকাজ ব্যাহত হয়। মৌসুমে জলবায়ুর কারণে এদেশে বছরের বিভিন্ন ঋতুতে জলবায়ুর কিছুটা তারতম্য হয়। বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, প্লাবিত হয় বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃষ্টিপাতের তারতম্যের কারণে মামুনের ভ্রমণকৃত এলাকায় শীত ও গরমের প্রকোপ বেশি হবে না। অন্যদিক কম বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে মামুনের নিজ এলাকায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং প্রচণ্ড গরম অনুভূত হবে। তাছাড়া কৃষিকাজ ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে। তাই বলা যায়, বৃষ্টিপাতের তারতম্যের সাথে সাথে মামুনের নিজ এলাকা ও ভ্রমণকৃত এলাকার স্থানীয় জলবায়ুর তারতম্য ঘটবে।